বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৮:০০ অপরাহ্ন

৩০ লাখ টাকা ঘুষ না দেওয়ায় মেলেনি পেনশন!

৩০ লাখ টাকা ঘুষ না দেওয়ায় মেলেনি পেনশন!

স্বদেশ ডেস্ক: সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ টি এম সোহেলের বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ তুলেছেন সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর এস এম মনোয়ার হোসেন। তার দাবি, ঘুষ না দেওয়ায় অবসর নেওয়ায় ১৩ মাস পার হয়ে গেলেও তিনি অবসরকালীন ভাতা (পেনশন) পাচ্ছেন না।

আজ রোববার বেলা ১১টায় সিরাজগঞ্জ থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিক পত্রিকার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন প্রফেসর এস এম মনোয়ার হোসেন। এ সময় সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফাও উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর আমি অবসর গ্রহণ করি। এরপর ১ জুলাই বর্তমান অধ্যক্ষ বরাবর পেনশন সংক্রান্ত ফাইল জমা দিতে গেলে তিনি নেননি। এভাবে কয়েক দফায় ফাইল জমা দিতে গেলেও সেটা গ্রহণ করেননি অধ্যক্ষ টি এম সোহেল। পরে ডাকযোগে পেনশন সংক্রান্ত ফাইল বর্তমান অধ্যক্ষ বরাবর পাঠালেও তিনি আমলে নেননি। ওই ফাইলটি অগ্রায়নের জন্য আমি দফায় দফায় অধ্যক্ষ বরাবর চিঠি দিলে তিনি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অসম্পূর্ণ ফাইল উল্লেখ করে আমাকে পাল্টা চিঠি দেন। এভাবে পাল্টা-পাল্টি চিঠি আদান-প্রদানের পর অবশেষে ২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর পেনশনের ফাইলটি অসম্পূর্ণ অবস্থায় মাউশিতে পাঠান অধ্যক্ষ টি এম সোহেল। এ কারণে আমার পেনশন অনুমোদন প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।’

মনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে ৩০ লাখ টাকা ঘুষ না দেওয়ায় বর্তমান অধ্যক্ষ এমনটা করছেন। নিজের আস্থাভাজন শিক্ষককে দিয়ে সাবেক উপাধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফার কাছে ঘুষের প্রস্তাব দেন অধ্যক্ষ সোহেল। কিন্তু ওই টাকা দেওয়া সম্ভব না হওয়াতে আমাকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।’

সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ অডিট চলাকালীন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাস ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক সুলতান মাহমুদ আমার কাছে এসে প্রফেসর মনোয়ার স্যারের পেনশন ও অডিট নিস্পত্তি করতে ৩০/৩২ লাখ টাকা অধ্যক্ষের টেবিলে রাখতে বলেন।’

এদিকে ঘুষ দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক সুলতান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেন অবসরে যাওয়ার পর অডিট অধিদপ্তর থেকে একটি টিম আসে কলেজের আয়-ব্যয় অডিট করার জন্য। কিন্তু তারা কলেজের বিভিন্ন নথিপত্র দেখে নানা অনিয়ম এবং কলেজ ফান্ডের ৯২ লাখ টাকার কোনো হদিস না পাওয়াতে অডিট স্থগিত করে চলে যান। পরে কলেজ কর্তৃক অভ্যন্তরীণ একটি অডিট করার পরামর্শে বর্তমান অধ্যক্ষ টি এম সোহেল একটি অডিট কমিটি করে দেন এবং তাদের দেওয়া প্রতিবেদন মতে ১৯টি আপত্তি উত্থাপিত হয়। যার মধ্যে আর্থিক লেনদেন অনেকাংশে জড়িত। এককথায় একাধিক অভিযোগে তার বিরুদ্ধে প্রায় পৌনে ৩ কোটি টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ প্রতিয়মান। বিধায় এ সকল অভিযোগের প্রেক্ষিতে হয়তো তার পেনশন ও অবসর ভাতা প্রদানে বাধার কারণ হতে পারে। এখানে ঘুষ লেনদেন করা বা প্রস্তাবের কোনো প্রশ্নই ওঠে না।’

এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর টি এম সোহেল বলেন, ‘এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি যথাযথ নিয়মে প্রফেসর মনোয়ার হোসেনের পেনশন সংক্রান্ত ফাইল মাউশিতে পাঠিয়েছি। বাকি কাজ তাদের। এখানে আমার কিছুই করার নেই। আমার অগোচরে ইতিপূর্বে কে বা কারা অডিট আপত্তি নিস্পত্তির জন্য মন্ত্রণালয়ে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ প্যাড ও আমার স্বাক্ষর জাল করে পত্র পাঠিয়েছিল, যা ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ সদর থানায় ৯৬৩ নং জিডিতে বিস্তারিত উল্লেখ করা আছে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877